সরকার ইতিমধ্যে অনেক সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী করতে কারিগরি শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অধিকতর বিনিয়োগের প্রচেষ্টা চলছে। তরুণদের চাকরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা ও আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সরকার আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যেখানে প্রতিটি জনশক্তি স্মার্ট হবে। সবাই প্রতিটি কাজ অনলাইনে করতে শিখবে, ইকোনমি হবে ই-ইকোনমি, যাতে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসে করতে হবে। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মযোগ্যতা সব কিছুই ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে হবে। ই-এডুকেশন, ই-হেলথসহ সব কিছুতেই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা তা করা সক্ষম হব এবং সেটি মাথায় রেখেই কাজ চলছে। আমাদের তরুণ সম্প্রদায় যত বেশি এই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা শিখবে, তারা তত দ্রুত দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নানা অনুষঙ্গ ধারণ করে তরুণদের প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এ ধরনের ৫৭টি ল্যাব প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবিশন সেন্টার স্থাপন এবং ১০টি ডিজিটাল ভিলেজ স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। ৯২টি হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের নির্মাণ করা হচ্ছে। সারা দেশে ৬ হাজার ৬৮৬টি ডিজিটাল সেন্টার এবং ১৩ হাজারের বেশি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন। সামনের স্মার্ট বাংলাদেশও শেখ হাসিনার সরকার করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বলেছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ দেবেন। আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। তিনি যে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছেন, সেটির জন্যও তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ, যার যাত্রা হয়েছিল ২০০৮ সালে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য সবার জন্য কানেক্টিভিটি, দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, ই-গভর্নমেন্ট এবং আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন- এই চারটি সুনির্দিষ্ট প্রধান স্তম্ভ নির্ধারণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে ২০৪২ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রায়। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটির বেশি এবং মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬০ লাখেরও উপরে।
জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৮ হাজার ৮০০টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছেন, যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। এর ফলে একদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্য, অন্যদিকে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হচ্ছে। দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে ও স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী সুযোগ কাজে লাগানোর পথ সুগম করতে সরকার আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদের সুদ ও জামানতবিহীন ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট এবং ট্রেনিং, ইনকিউবেশন, মেন্টরিং এবং কোচিংসহ নানা সুবিধা দেওয়ার ফলে দশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। বিকাশ, পাঠাও, চালডাল, শিওর ক্যাশ, সহজ, পেপারফ্লাইসহ ২ হাজার ৫০০ স্টার্টআপ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। যারা প্রায় আরও ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। ১০ বছর আগেও এই কালচারের সঙ্গে আমাদের তরুণরা পরিচিত ছিল না। মাত্র ৭ বছরে এই খাতে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে।
ইসলামের দৃষ্টিতে যৌবনকাল,
যুবক হচ্ছে জাতির গৌরব ও ভবিষ্যৎ আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। যুবক হচ্ছে প্রতিটি জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির সোপান, জাতির মূল্যবান সম্পদ এবং দেশ গড়ার শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। ইসলাম এ সম্পদের যথাযথ সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। যুবকদের নৈতিকতার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, পরিশীলিত মনন ও বলিষ্ঠ চিন্তাধারায় সমৃদ্ধকরণে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে, যার আলোকে কাজ করে গেছেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আদর্শ যুবক গঠনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সফল ভূমিকা ও সুনিপুণ কর্মধারা যুবকল্যাণ প্রত্যাশীদের অনুসরণ করতে হবে। কারণ মানব ইতিহাসে তিনিই সর্বোত্তম ও অতুলণীয় যুবসমাজ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁরই পবিত্র স্পর্শে পৃথিবী পেয়েছে সংগ্রাম ও বীরত্বের প্রতীক আম্মার ইবনে ইয়াসার, হিজরত ও দাওয়াতের আদর্শ মাসআব ইবনে উমাইর, নেতৃত্ব ও পরিচালনার বিস্ময়কর উদাহরণ উসামা ইবনে যায়েদ এবং ইলম ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা)। এসব নিষ্ঠাবান তারুণ্যের তেজে পাল্টে গেছে ইতিহাসের গতিধারা, ধূলোয় মিশে গেছে বাতিলের রাজমুকুট, জুলুম ও অত্যাচারের আঁধার দূরীভূত হয়ে পৃথিবীব্যাপী বয়ে গেছে ইনসাফ ও ন্যায়ের ফল্গুধারা এবং উন্মোচিত হয়েছে জ্ঞান ও বিজ্ঞানের নবদিগন্ত।আর পবিত্র কোরআন, সহিহ হাদিস ও ইসলামের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে যেখা যায়, ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে।এ পৃথিবীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন প্রবাহের ধারাকে মোটামুটি তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়। শৈশব, যৌবন ও বার্ধক্য। এই তিনকালের মধ্যে সকল বিবেচনায় যৌবনকাল হলো- শ্রেষ্ঠ সময়। শৈশবে মানুষ থাকে অসহায় ও পরনির্ভর। পিতা-মাতা ও অন্যের সহযোগিতা ব্যতীত সে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না এবং এ সময় তার কোনো চিন্তার সুষ্ঠু বিকাশ ঘটে না। অনুরূপভাবে বার্ধক্যেও সে অসহায় দুর্বল ও পরনির্ভর হয়ে পড়ে। মনের ইচ্ছা থাকলেও সে সবকাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারে না। এমনকি চিন্তাশক্তির বিলোপ পর্যন্ত ঘটে থাকে। কিন্তু যৌবনকাল এ দু’য়ের ব্যতিক্রম। যৌবনকালে মানুষ অসাধ্য সাধনে আত্মনিয়োগ করতে পারে। এটাই যৌবনের ধর্ম।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যৌবনকালকে গণিমতের মাল তথা মূল্যবান সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে তা মূল্যায়ন করার তাগিদ দিয়েছেন। কেননা এ সময় সম্পর্কে পরকালে জবাবদিহিতা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, আমর ইবনু মায়মুন আল আওদি (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জনৈক ব্যক্তিকে উপদেশস্বরূপ বলেন, পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্তুকে গণিমত মনে করো। যথা- ১. তোমার বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে, ২. পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে, ৩. দারিদ্র্যতার পূর্বে সচ্ছলতাকে, ৪. ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে ও ৫. মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে। ’ –তিরমিজি
আর আমরা সাধারণত জীবন গঠনের প্রাথমিক শিক্ষা পাই পিতা-মাতার কাছ থেকে। এরপরই আমাদের জীবনে চলে আসে বন্ধুমহল। পিতা-মাতার স্নেহের কোল থেকে বেরিয়ে মানুষ প্রথম যাদের মাঝে বিচরণ করে তারা হলো বন্ধু। আর বন্ধুদের উচিত হলো বন্ধুর সঙ্গে এমন চরিত্র উপস্থাপন করা যাতে বন্ধু সেই চরিত্রের মাধ্যমে প্রভাবিত হয় এবং সব ধরনের সৎ কাজে উৎসাহিত করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা। কিন্তু বর্তমান সমাজের বন্ধুমহল এবং পরিবেশ-পারিপার্শ্বিকতার অবস্থা এমন যে, অনেক সময় দেখা যায় মানুষ তার বন্ধুর কারণেই খারাপ হয়ে যায়, ভুল পথে পা বাড়ায়। সাধারণত দেখা যায়, কোনো মানুষ প্রথম অসৎ কাজটি শেখে বন্ধুর কাছ থেকে। অশ্লীল সিনেমা, সিগারেট, ইভটিজিং, গাঁজা, মদ, অপরাধমূলক কাজগুলো বন্ধুদের প্ররোচনায়ই করা শুরু করে। এ সমাজে নামাজের দিকে ডাকার মতো বন্ধুর তুলনায় আড্ডা দিতে ডাকার মতো বন্ধুর সংখ্যাই বেশি। সুতরাং বন্ধুদের দ্বারা পাশবিক চরিত্র দমনের চেয়ে বিকাশই বেশি হয়। এ জন্যই হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হও’, কারণ বন্ধুর চারিত্রিক প্রভাবেই মানুষ বেড়ে ওঠে। আর এভাবেই যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। আর বর্তমান সমাজে চলমান একটি বাস্তবতা হলো, আমরা আমাদের যুব-তরুণদের দ্বীন ও ইসলামের বিভিন্ন বিষয় থেকে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বিরত রাখার চেষ্টা করে থাকি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সুকৌশলে আমরা যুবকদের ইসলাম সংক্রান্ত বিষয় থেকে দূরে সরিয়ে রাখি। এ ক্ষেত্রে তরুণ-যুবকদের সামনে তুলে ধরা হয়, যৌবনকাল হচ্ছে এনজয় করার সময়। আর যদি কোনো যুবক ইসলাম নিয়ে অধ্যয়ন করতে চায়, ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে দাওয়াত দিতে চায় তাহলে তাকে উৎসাহদানকারীর চেয়ে নিরুৎসাহিতকারীর সংখ্যাই সমাজে বেশি দেখা যায়। তাকে বলা হয় আরে রাখো, ধর্মকর্ম তো বার্ধক্যের জন্য। আগে কিছুদিন আনন্দ-ফুর্তি করো। নিজের ক্যারিয়ার গড়ো। পক্ষান্তরে আমরা যদি কোরআন-সুন্নাহর দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, ইসলাম মানবজীবনের সবচেয়ে বেশি মূল্যবান সময় নির্ধারণ করেছে যৌবনকালকে। প্রতিটি মানুষের যৌবনকাল হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন কোনো বনি আদমই পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে এক কদম আগে বা পিছে নড়ার অনুমতি পাবে না। এর মধ্যে প্রথম প্রশ্ন হবে তার জীবন সম্পর্কে, কোথায় সে এটি ব্যয় করেছে। দ্বিতীয় প্রশ্ন করা হবে তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কী কাজে সে যৌবনকাল নষ্ট করেছে। তৃতীয় প্রশ্ন- সম্পদ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে। চতুর্থ প্রশ্ন- উপার্জিত সম্পদ কোন কাজে এবং কোথায় ব্যয় করেছে। পঞ্চম ও শেষ প্রশ্ন- যেসব বিষয়ে সে জ্ঞানার্জন করেছিল তার কতটুকু আমল করেছে। ’ –সহিহ বোখারি
ইতিহাস সাক্ষী, তাকওয়াবান যুবকদের দ্বারা পৃথিবী উপকৃত হয়েছে এবং পৃথিবীতে উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার পথভ্রষ্ট যুবকদের দ্বারা পৃথিবীর বহু সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাকওয়াবান যুবকদের নিয়ে বদর, ওহুদ, খন্দক ও তাবুকসহ অন্যান্য যুদ্ধে বিজয়লাভ করেছেন। চীন বিপ্লব, ফরাসি বিপ্লব এবং বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার যুদ্ধেও লাখ লাখ যুবকের আত্মত্যাগ ও ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে আছে।
পরিশেষে বলতে চাই, ইসলাম যেখানে যৌবনকালকে এত গুরুত্ব দিয়েছে, মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যৌবনকালকে ভালো কাজে ব্যয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে, সেখানে আমাদের দেশে অপশক্তিগুলো তরুণদের নেশা, সন্ত্রাস অপকর্মের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।আর পৃথিবীর প্রতিটি বিভাগেই যুবসমাজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তাই আল্লাহর দেওয়া পবিত্র আমানত যৌবনের প্রতিটি ধাপ, মেধা, শ্রম ও প্রতি ফোঁটা রক্ত মানুষ সত্যিকার অর্থে আল্লাহর পথে ব্যয় করলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কল্যাণে ভরে যাবে এবং পরকালের ভয়াবহ দিনে আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় লাভের সৌভাগ্য অর্জন করবে। যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। অন্যথায় জাহান্নামের লেলিহান শিখায় অগ্নিদগ্ধ হতে হবে।
আজ আন্তর্জাতিক যুব দিবস আমরা চাই হালের তরুণ-যুবকরা গড্ডলিকা প্রবাহে না ভেসে ইসলাম সম্পর্কে জানবে, ইসলাম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের এ উন্নয়নশীল দেশে রয়েছে এক বিরাট যুব সমাজ- এদের হাতকে দেশ গড়ার কাজের উপযোগী করে তুলতে পারলে, মনে দেশপ্রেম এবং কর্মের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে নিঃসন্দেহে বলা যায় আমাদের এ দেশ আর গরিব থাকবে না।আর তরুণরাই বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের মানবাধিকার ভিত্তিক যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা এবং তথ্যে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আইনী সংস্কারের পাশাপাশি ব্যাপক সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনে সহায়ক পদ্ধতির বিকাশের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষায় মেয়ে শিশুর প্রবেশাধিকার সুরক্ষিত এবং উন্নীত করতে হবে। পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে পিতা-মাতা এবং অন্যান্য আইনগত অভিভাবকদের ভূমিকা, আত্মমূর্তি, আত্মসম্মান এবং মর্যাদা শক্তিশালী করতে এবং মেয়েদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ রক্ষায় উন্নতি ও সমর্থনে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। যুব সমাজ মানেই ছেলেমেয়ের সমান অংশীদারত্ব, এটি সর্বজন স্বীকৃত হতে হবে। তাহলেই যুব সমাজের অংশগ্রহণে জাতিগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।তাই উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত হবেই। আজকের এ মহান দিনে আমাদের সকলের শপথ হোক যুব সমাজকে দেশের- দশের জাতির উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারলেই জাতীয় যুব দিবস পালনের সার্থকতা বাস্তবে প্রতিফলিত হবে। যুব দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পাবে।এ দেশের যুবসমাজ প্রগতিশীল ভাবনা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে যে অতীত স্বর্ণালী ইতিহাস তৈরি করেছে তা আজও অব্যাহত থাকবে। পরিবার ও দেশের মুখ উজ্জল করবে-এটাই প্রত্যাশা
Leave a Reply