জেলার ৪ টি সংসদীয় আসনের ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে টানা তিন মেয়াদে বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়নে দৃশ্যমান ব্যপক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় শহর, ইউনিয়ন ও গ্রামের কিছু নেতার বিরুদ্ধে অসাংগঠনিক কর্মকান্ড ও কর্মীদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ করা হচ্ছে। তাদের কর্মী বিরুপ আচরণের ফলে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে নৌকার প্রার্থীরা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে ৬ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকার প্রতিকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী দেশের প্রথম সারির ব্যবসায়ী ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইমলাম বিশ্বাস দুলাল। তিনি দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতীক ট্রাক।
এ আসনটি একটি পৌরসভা ও ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৬ হাজার ৩’শত ৩৬ জন। তার মধ্যে মহিলা ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৭’শত ৫৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫’শত ৭৭ জন।
২০০৮ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত তিন মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামলীগের বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক মৎস্য ও প্রার্ণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এসময়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক কোন্দলের জেরে একের পর এক সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা সব অর্জন ডুবিয়ে দিয়েছে। গত দুই বছরের রেকর্ডে জানা গেছে আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের আধিপত্ত বিস্তারের জেরে খুন হয়েছেন ১০ জন দলীয় নেতাকর্মী। এসব ঘটনার আগে পরে সংঘর্ষ, লুটপাট আর বসতবাড়ি ভাংচুরের ঘটনা বিষিয়ে তুলেছে উপজেলাবাসিকে।
সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর রাতে উপজেলা আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য রিপন হোসেন খুনের শিকার হয়। হত্যার পিছনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলালের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আহসানুল কবির বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীরা সবাই নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থক বলে জানা গেছে। ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতি দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছে। এর একটি ভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি আব্দুল হাই এবং আরেক ভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইমলাম দুলাল। গত তিন মেয়াদে নির্যাতিত, প্রতারিত ও বঞ্চিত নেতাকর্মীরা নজরুল ইসলাম দুলালের পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে তফসিল ঘোষনার আগে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু নজরুল ইসলাম দুলালের পক্ষে প্রকাশ্যে সভা সমাবেশে যোগ দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে নজরুল ইসলাম দুলাল একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি হয়েও ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
ঝিনাইদহ-২ (ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকুন্ডু) আসনে দেশের দুই হ্যাভিওয়েট প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছে। এরমধ্যে একজন আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী নৌকা প্রতিকের তাহজিব আলম সিদ্দিকী সমি। তিনি ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হন। তার বাবা নূরে আলম সিদ্দিকী স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, তুুখোড় রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও তৎকালীন যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী দেশের প্রথম সারির ঔষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস ও রেডিয়েন্ট বিজনেস কনসোর্টিয়াম লিমিটেডসহ দেশর স্বনামধন্য ১০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিক ঈগল।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে মোট ১১ জন প্রার্থী ভোট করছেন। এরমধ্যে ভোটারদের আলোচনায় দুই হ্যাভিওয়েট প্রার্থী দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ও বর্তমান সংসদ সদস্য তাহজিব আলম সিদ্দিকী। তবে ভোট সামনে রেখে জনগণের কাঠগড়ায় আলোচিত হচ্ছে দুই প্রার্থীর মধ্যে জনসেবায় এগিয়ে কে। তবে, জনগণের সুখে-দুঃখে যে পাশে থাকবে এবং জনসেবা যিনি এগিয়ে থাকবেন তাকেই ভোট দিবেন বলে মন্তব্য সাধারন ভোটারদের।
স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নৌকার প্রার্থী তাহজিব আলম সিদ্দিকী গত দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করলেও জনগণের নেতা হতে পারেননি। তিনি বেশির ভাগই সময়ই থেকেছেন রাজধানীতে। ফলে প্রয়োজনে তাকে কাছে পাননি এলাকার সাধারন মানুষ। উন্নয়নের প্রশ্নে নির্বাচনী এলাকার গ্ররুত্বপূর্ণ দু-একটি সড়ক বাদে রাস্তাঘাট, ব্রীজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে প্রায় শতভাগ।
অন্যদিকে অপর হ্যাভিওয়েট প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল নিজ প্রচেষ্টায় ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার শুরু থেকেই এলাকার মানুষকে কাছে রেখেছেন। তিনি এলাকার মানুষের বিপদে আপদে সহযোগীতা করে চলেছেন। বছরের দুই ঈদে ৩ থেকে ৫ হাজার গরু ছাগল জবাই করে চাল ডালসহ অন্যান্য সামগ্রী এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষের তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছেন। জনসেবার এ কাজ তিনি দীর্ঘ বছর ধরে করে আসছেন বলে জানিয়েছেন সাধারন ভোটররা। তার প্রতিষ্ঠত ১০ শিল্প প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী এলাকার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ চাকরী করছেন বলে জানান তারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিকের নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, আমি প্রতিদিনই ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। আমার কর্মী সমর্থকরা প্রচারনা করছেন। তবে, প্রতিদিনই আমাদের কর্মী সমর্তকদের উপর হামলা হচ্ছে। কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে আহত ৭ সমর্থককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান করবো, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। উৎসব মুখর পরিবেশে যেন ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয় সে ব্যবস্থা করবেন।
ঝিনাইদহ-২ আসনটি সদর উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩’শত। এরধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫’শত ৩৩ জন ও নারী ২ লাখ ৩৮ হাজার ৭’শত ৬৩ জন।
এ আসনের নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি অশ্রুসিক্ত নয়নে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তিনি বলেন, আমি মানুষকে প্রাণ দিয়ে ভালবেসেছি। আমি ঝিনাইদহের মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবেসেছি ও মর্যাদা দিয়েছি। আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না। আমি আপনাদের আল্লাহর ওয়াস্তে বললাম আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না।
ঝিনাইদহ-৩ (কোচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা) আসনে ৬ জন প্রার্থী। নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি মইনুদ্দিন মিয়াজির ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সচিব সালাউদ্দীন মিয়াজি। তার প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল। তিনি দুই মেয়াদে পৌর মেয়র এবং দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এবছর তিনি নৌকার মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিক ট্রাক।
ঝিনাইদহ-৩ আসনটি মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর দুই উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও ১৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এরমধ্যে কোটচাঁদপুরে এক পৌরসভা ও ৫ টি ইউনিয়ন এবং মহেশপুরের ১ টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ২’শত ২৪ জন। পুরুষ ২ লাখ ৩ হাজার ৯’শত ৪৪ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ২’শত ৭৭ জন।
এ আসনে নৌকার প্রার্থী সালাউদ্দীন মিয়াজি রাজনৈতি ব্যক্তি হিসাবে একেবারেই নতুন। তিনি ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে দলের সদস্য হন। এরপর দলের মনোনয়ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসার পর দুই উপজেলার আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার পাশে এসে দাড়ায়। অন্যদিকে বর্তমান সংসদ সদস্য দির্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। সালাউদ্দীন মিয়াজিকে নৌকার প্রার্থী ঘোষনার পর স্থানীয় রাজনীতিতে চরম ফাটল দেখা দেয়। নেতাকর্মীরা দুইভাগে ভিভক্ত হয়ে পড়ে।
নৌকার প্রার্থী সালাউদ্দীন মিয়াজি বলেন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত একটি নিদ্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে থেকে দেশ বিদেশের মানুষের সেবা করেছি। শেষ তিন বছর প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসাবে সুনামের সাথে দ্বায়িত্ব পালন করেছি। আমার বাবা মইনুদ্দিন মিয়াজি এক মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে জীবনের বাকি সময়টা ব্যয় করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছেন। নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিক, নৌকা আওয়ামীলীগের প্রতিক, নৌকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিক। নৌকা উন্নয়নের প্রতিক। নৌকা প্রতিক আমি নির্বাচনী এলাকা মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর আওয়ামীলীগের হাতে তুলে দিয়েছি। তারা আমাকে নির্বাচিত করে সেবা করার সুযোগ দেবেন বলে বিশ্বাস করি।
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের আংশিক) আসন থেকে আ’লীগের নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার শক্ত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল মান্নানের ভাই আব্দুর রশিদ খোকন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুরর রশিদ খোকনের প্রতিক ট্রাক। তিনি আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন। তিনি রাজনৈতিক মাঠে নতুন মুখ হলেও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান পরিবারের সদস্য হওয়ায় দলের এশটি অংশ তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ভোটাররা বলছেন, এ আসনে মুল প্রতিদ্বন্দ্বি হবে নৌকার আনোয়ারুল আজীম আনার ও ট্রাক প্রতিকের প্রার্থী আব্দুর রশিদ খোকনের মধ্যে। এই আসনে দির্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের মধ্যে দুইটি গ্রুপের লবিং গ্রুপিং বিদ্যমান রয়েছে।
এখানে একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নৌকা প্রতিকের আনোয়ারুল আজীম আনার। তার পক্ষে কাজ করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু, বর্তমান পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিবলি নোমানী।
অপর গ্রুপ স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ খোকনের নেতৃত্ব রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আয়ুব হোসেন, প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ইসরাইল হোসেন, সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি।
তবে, ভোটাররা বিগত সময়ের জনসেবা আর দোষ ত্রুটি সামনে নিয়ে আসছে নির্বাচন সামনে রেখে। এদিক থেকে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আনোয়ারুল আজিম আনার। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। সাংসদ হিসাবে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য তার বেশ সুনামও রয়েছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তার নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে দেখা করে সমস্যা শোনেন ও সমাধান করেন। তিনি চলাচলের সময় কোন পুলিশ প্রটোকল ব্যবহার না করে একা একা চলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। সবথেকে আলোচিত বিষয় তার নির্বাচনী এলাকায় যে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার বাড়িতে যান, দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং শোকার্ত পরিবারকে শান্তনা দেন। এমনও হয়েছে তিনি একদিনে ১০ জন মৃত্যু ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সাথে দেখা করে শান্তনা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৪ সহস্রাধিক মৃতু ব্যক্তির দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। যা দেশের একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে বিরল।
ঝিনাইদহ-৪ আসনটি কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৩’শত ২৯জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪’শত ৬৫ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮’শত ৬০ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ৪ জন।
নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুল আজিম আনার বলেন, বিগত ১০ বছরে কালীগঞ্জের রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণসহ ব্যাপক উন্নয়নমুলক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। আমি সব সময় মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করার চেষ্টা করেছি। আমি বিশ^াস করি এবারো ভোটাররা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে এলাকার উন্নয়নে ভুমিকা রাখার সুযোগ দিবে।
ঝিনাইদহ জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার রোকনুজ্জামান জানান, জেলার মোট আয়তন ১ হাজার ৯’শত ৬৪.৭৭ বর্গ কিলোমিটার। এ জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ১ হাজার ১’শত ৮৯জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৫’শত ১৯ জন, নারী ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬’শত ৫৮ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১২ জন। উপজেলা ৬ টি, সংসদীয় আসন ৪টি।
Leave a Reply