বাঁশখালী পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর প্রণব কুমার দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি ও জেলা পূর্জা উদযাপন পরিষদের আপ্যায়ন সম্পাদক লায়ন শেখর দত্ত, সুধির মল্লিক, উপদেষ্টা অধর লাল চক্রবর্তী, উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক বাবুল কান্তি দেব বাবলা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য পুলিন শীল, উপজেলা সহ সভাপতি রাজিব গুহ, উপজেলা সহ সভাপতি স্বপন কুমার দাশ ও উপদেষ্টা শ্যামল কিশোর চৌধুরী।
সভায় জানানো হয়, এবার বাঁশখালীতে ৮৭ টি মন্ডপে দূর্গাপূজা উদযাপন হবে। দূর্গা পূজা ও উৎসবে প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আলেম ওলামা ইমাম খতীবসহ সকলে যেভাবে আমাদের আয়োজনে সার্বিক সহযোগীতা ও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
পূজা উদযাপন পরিষদের বাঁশখালী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু কুমার দাশ ও উপজেলা জয়েন্ট সেক্রেটারী সাজু দাশ সাজুর যৌথ পরিচালনায় উক্ত মতবিনিময় সভায় মতামত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, পুকুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি সুবল দে, উপজেলা কমিটির কর্মকর্তা সুজন আচার্য্য, সাধনপুর ইউনিয়ন সভাপতি সুজন দাশ, চাম্বল ইউনিয়নের সভাপতি নিউটন দাশ, বৈলছড়ি ইউনিয়নের সভাপতি শেখর চৌধুরী, কাথরিয়া ইউনিয়নের সভাপতি জনি শীল, কালীপুর ইউনিয়নের সভাপতি প্রকৌশলী রণি সরকার, পুঁইছড়ি ইউনিয়নের সভাপতি রাম প্রসাদ দেব, শেখরখীল ইউনিয়ন সভাপতি প্রনব দেব, শীলকূপ ইউনিয়নের সভাপতি শিপন দাশ, বাঁশখালী পৌরসভার সভাপতি নির্মল রুদ্র। এসময় বাঁশখালী প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক শফকত হোসাইন চাটগামী, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী আবদুল মতলব কালু, সাংবাদিক মোহাম্মদ এরশাদ, সাংবাদিক দিদার হোসাইনসহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, এবছর আমাদের দূর্গা উৎসব আগের চেয়ে ঝাঁকজমকপুর্ণভাবে পালন করা হবে। পুজায় আজানের সময় মাইক বন্ধ রেখে ঢাকঢোল বাজিয়ে পূজা উদযাপন করবেন। মদ পান করে কেউ মন্ডপে যেন না আসেন। ডিজে আমাদের হিন্দু ধর্মের সংস্কৃতি নয়।
পুলিন শীল বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে আমাদের সনাতনী সম্প্রদায়ের দূর্গা পূজা থাকবে। আমরা আমাদের ধর্ম পালন করব, কোন অবস্থাতেই অন্য ধর্মের ব্যাঘাত হয় এমন কোন কাজ করব না।
প্রতিটি মন্ডপে ১৫ জন করে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক লিষ্ট করে মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক পরিবেশ যেটাই হোক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য বাঁশখালীর সকল মহল থেকে আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে। কোন অবাঞ্ছিত ব্যক্তিকে মন্ডপে প্রবেশ করতে দেবেন না।
অধ্যাপক বাবলা দাশ বাবলা বলেন, ৮৭টি পুর্জা মন্ডপের প্রতিনিধি এসেছেন, প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে পূজা উদযাপন করতে হবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আপ্যায়ন সম্পাদক লায়ন শেখর দত্ত তার বক্তব্যে বিগত ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা, হিন্দু নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলাসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমরা আমাদের পূজা সুন্দরভাবে আয়োজন করতে চাই। এই আয়োজনে দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা পূর্ণ নিরাপত্তা ও পরিবেশ চাই।
পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু কুমার দাশ বলেন, সারা দেশে কিছু কিছু সমস্যা হলেও বাঁশখালী সমস্যা হয়নি। আগামীতেও আমরা এই পরিবেশ চাই। তিনি কোন ঘটনা ঘটলে আগে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং প্রশাসনকে জানানোর আগে কেউ ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করব না। কেউ পূজা মন্ডপ ও পূজা সংক্রান্ত বিষয়ে কেউ ফেসবুক পোস্ট কমেন্ট করে উত্তেজনা ছড়ালে তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বাঁশখালীর হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্যামল দাশসহ ১৫-১৬ জন নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলার নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর প্রণব কুমার দাশ মতবিনিময় সভায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মাদক, ইভটিজিং ছিনতাইসহ কোন অপরাধ সংঘটিত হলে অপরাধীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। নামাজের সময় অবশ্যই নামাজের সময় মাইকটা বন্ধ রাখবেন। প্রতীমা বিসর্জনের দিন স্ব স্ব মন্ডপকে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন শেষ দিন বিকাল ৫টার মধ্যে প্রতীমা বিসর্জন দিতে নির্দেশ দিতে হবে।