এদিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ময়নার দোকান নামক স্থানে মাছ ধরতে এসে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন হৃদয় মিয়া (২২) নামে এক যুবক।
ভারতের উজানের ঢলের পানি ও টানা বর্ষণে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও জুড়ীসহ অন্যান্য উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েন। মনু নদীর ছয়টি স্থানে ও ধলাই নদীর চারটি স্থানে বন্যাপ্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বেশি আক্রান্ত হয় রাজনগর, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়ন। বন্যা আক্রান্ত মানুষকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী বোর্ডসহ উদ্ধার ও বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করছে। ২২ আগস্ট মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ওইদিন রাত থেকে কিছু যানবাহন চলাচল শুরু করেছে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা বলেন, উপজেলা সদর এখনও পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও পানি কমতে শুরু করেছে। তবে কাউয়াদীঘি হাওরপাড়ের পাঁচগাঁও, ফতেপুর ও উত্তরবাগ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। কুলাউড়ার টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জানান বাড়ি-ঘর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে নিখোঁজ, রাজনগর উপজেলার মেদিনীমহল গ্রামের ছনাওর মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২) গতকাল দিবাগত রাতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে আসে সদর ইউনিয়নের ময়নার দোকান এলাকায়। রাত দেড়টার সময় ঝকি জাল খেউ (মাছ ধরতে ফেলার) দেওয়ার সময় তিনি পানিতে পড়ে আর ওঠতে পারেনি।
ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মেদিনীমহল গ্রামের হৃদয় অনেকের সঙ্গে জাল নিয়ে মাছ ধরতে আসেন ময়নার দোকান এলাকায়। মাছ ধরতে জাল উড়িয়ে ফেলার সময় তিনি পা ফঁসকে পানিতে পড়ে যান। তীব্র স্রোত থাকায় তিনি আর ওঠতে পারেননি। এ বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে রাজনগর ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। তারা সিলেটের ডুবুরি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা আজ শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ ইং, সকালে এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আশপাশ এলাকা খুঁজে নিখোঁজ ব্যক্তিকে না পেয়ে সিলেটে ফিরে যায় ডুবুরি দল বলে জানিয়েছেন রাজনগর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ম্যানেজার আলী হোসেন। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ত্রিপুরায় বৃষ্টি হওয়াতে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি ও নীচে নেমে যাবে। গতকাল ২২ আগস্ট বিকেলে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা মেজর জেনারেল চৌধুরী আজিজুল হক হাজারী ও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম প্রাব্লিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২৩৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১২লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
Leave a Reply