মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় দেশের সব চাইতে দীর্ঘতম সেতু লৌহজংয়ের মাওয়া পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত। পদ্মাসেতুর দৃশ্যপটে আসার পর থেকে নদী তীরবর্তী লৌহজংয়ের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। বিশেষ করে মাওয়া নদী বন্দর ফেরী ঘাটে পর্যটকদের ব্যাপক আনাগোনা বেড়েছে। শহর থেকে সবাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন একটু রিল্যাক্সে সময় কাটানোর জন্য। কিন্তু শিমুলিয়া ঘাটে প্রবেশ করলেই দিতে হচ্ছে টাকা।
ভুক্তভোগী পর্যটকদের অভিযোগ,ঘাট এলাকায় বিআইডাব্লিউটিএ এর নির্ধারিত স্থানে গাড়ী পার্কিং করলে যে শুল্প পরিশোধ করতে হয় সেই টাকা এখন সড়কে প্রবেশ করলেই পরিশোধ করতে হচ্ছে পর্যটকদের ইজারাদার কর্তৃপক্ষের লোকজন শিমুলিয়া ঘাটে প্রবেশের অনেক দূরবর্তী স্থানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ী পাকিংয়ের নামে টাকা আদায় করছেন। কেউ সড়কে গাড়ী থামিয়ে পার্কিং এর টাকা পরিশোধ করতে না চাইলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এভাবে ইজারার নামে সড়কে দাঁড়িয়ে টাকা আদায়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে পর্যটকরা।
শিমুলীয়া-রানীগাঁও এলাক নদী বন্দর ঘাটটি আর ব্যবহার করা হয় না। পর্যটক স্পটে পরিনত হয়েছে যা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সুন্দর একটি দর্শনীয় স্থান। বি,আই,ডব্লিউ,টি,এ কর্তৃপক্ষের উদাশীনতার কারণে সড়কে দাঁড়িয়ে গাড়ী পাকিংয়ের নামে টাকা তোলা হচ্ছে। যা পর্যটকদের উদ্বেগের কারণ। এর ফলে পর্যটক কমার আশংকা রয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যার পূর্ব মুহুর্তে বেশ কয়েকজন স্থানীয় সংবাদকর্মী মাওয়া নদী বন্দর এলাকায় যাওয়ার সময় শিমুলীয়া-রানীগাঁও এলাকায় পথিমধ্যে গাড়ি আটকিয়ে ১০ টাকা চাঁদা চায় ৩/৪ জন লোক। কিসের চাঁদা জানতে চাইলে তারা বলেন, ঘাটে গাড়ি পার্কিয়ের জন্য চাঁদা দিতে হবে। চাদাঁ চাওয়ায় সংবাদকর্মীরা ছবি তোলেন। এতে করে ক্ষীপ্ত হয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে বাকবিতন্ডায়ও জড়ায় চাদাঁ তোলা লোকজন। এসময় সংবাদকর্মীদের সাথে অশোভন আচরনও করা হয়। টোকেনে ইজারাদার হিসেবে মোঃ ফরহাদ হোসেন নামে একজন ব্যক্তির নাম রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বি,আই,ডব্লিউ,টি,এ)’ এর শিমুলীয়া নদী বন্দর এর সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ মাহবুবুর রহমান কর্তৃক গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত একটি পত্র সুত্রে জানাযায়, শিমুলিয়া নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বিআইডব্লিউটিএ’র জায়গায় কর্তৃপক্ষের অর্থে নির্মিত সড়ক ব্যবহারকারী ব্যক্তিবর্গ/পর্যটকদের যানবাহন হতে শুল্ক আদায় পয়েন্টটির অনুমতি প্রদান করা হয়।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা জুলেখা বেগম জানান, রাস্তায় গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা নেয়া হইছে পার্কিং এর জন্য। মাওয়া ঘাটটিকে চাঁদা মুক্ত ও ছিনতাই মুক্ত করা হলে ভ্রমণ পিপাসুরা নিশ্চিন্তে পরিবার নিয়ে এই বন্দর এলাকায় সময় কাটাতে পারবো। দুই-তিনজন পুলিশ দিয়ে এতোবড় বন্দর এলাকাটির নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব না। টহল পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর নজরদারী বাড়াতেও হবে।
চাঁদা তোলার বিষয়ে প্রতিবাদ করা নারী সাংবাদিক পিংকি রহমান বলেন,হঠাৎ করেই মটরসাইকেল সিগনাল দেয়া হয়। মটরসাইকেল থামালেই ১০ টাকা হাতে টোকেন দেয় এবং ১০ টাকা চাওয়া হয় পার্কিং এর জন্য। কিসের টাকা জানতে চাইলে এবং ছবি তোলায় আমাদের সাথে খারাপ আচরন করা হয় এবং হুমকি দিয়ে বলা হয়, বড় বড় রাঘোব বোয়ালরাও কিছু করতে পারে নাই। আপনেরাও কিচ্ছু করতে পারবেন না! ছবি তুইলা নিয়া যান, ভাইরাল হমু!
এ বিষয়ে মাওয়া ঘাটের পোর্ট অফিসার সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, পার্কিং লট এবং তার সাথে সংযুক্ত রাস্তা তাদেরকে ইজারা দেয়া হয়েছে শুল্ক আদায় করার জন্য। তারা যদি নিয়ম বর্হিভূতভাবে কিছু করে থাকেন তাহলে ভুক্তভোগীরা যদি আমাদেরকে জানায় তাহলে আমরা ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply